বিসিএস ৩৫ ব্যাচের এই কর্মকর্তা ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রাজাপুরে যোগদান করেন। এর আগে তিনি সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সাভারের স্থানীয় সাংবাদিকদের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই বিপ্লব দমনে পুলিশের আগ্রাসী ভূমিকায় নেতৃত্ব দেন রাহুল চন্দ। আন্দোলন দমনের সময় তাকে হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে মাঠে পুলিশের সঙ্গে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। পাশাপাশি স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও আলোচনায় আসে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে রাহুল চন্দের নির্দেশে পুলিশ গুলি চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই গুলিতেই নিহত হন সাভার ডেইরি ফার্ম স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আলিফ আহমেদ সিয়াম। পরে ৬ জুন নিহত সিয়ামের বাবা বুলবুল কবির বাদী হয়ে সাভার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১নং, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে ২নং, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ৩নং, সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুনকে ৪নং এবং রাহুল চন্দকে ৫নং আসামি করা হয়।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুপুর ২টা থেকে ৩টার মধ্যে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। সিয়াম গুরুতর আহত হয়ে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং ৭ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
নিহতের বাবা বুলবুল কবির বলেন, শোকের কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, গুলির নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি হওয়া সত্ত্বেও রাহুল চন্দ এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। তিনি রাজাপুরে নির্বিঘ্নে চাকরি করছেন। এ বিষয়ে গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে রাজাপুরের ইউএনও রাহুল চন্দ সংক্ষেপে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, বিষয়টি ব্যক্তিগত, এ বিষয়ে কিছু বলার নেই। পরে ফোন কেটে দেন।
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমানও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা চলছে। অনেকেই বলছেন, হত্যা মামলার আসামি হয়েও একজন কর্মকর্তা দায়িত্বে বহাল থাকা প্রশাসনিক জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
No comments:
Post a Comment