অনেকের অভিযোগ তার মদদেই ছিল পাথর-বালু চুরির হিড়িক। মূলত তার কারণে কোটি কোটি টাকার বালু পাথর চুরির ঘটনা ঘটে দিন-দুপুরে ভোলাগঞ্জে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সিলেট বিভাগীয় কমিশনার খান মো: রেজা-উন-নবী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বদলির এ আদেশ দেয়া হয়। ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় তাকে বদলি করা হয়েছে।সেখানে ফেঞ্চুগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামকে পদায়ন করা হয়।
এ বছরের জানুয়ারিতে কোম্পানীগঞ্জে যোগদান করেন তিনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, তার দায়িত্বকালে লোক দেখানো অভিযান আরও শিথিল হয় এবং সেই সুযোগে লুটপাটকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। এ নিয়ে কার্যত কোনোন ভূমিকা পালন করেননি তিনি।
গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর এবং রেলওয়ে বাঙ্কারে ভয়াবহ লুটপাট চলে আসছে। প্রথমে রাতের আঁধারে প্রাকৃতিক সম্পদ চুলি হলেও পরে দিনের আলোতে প্রকাশ্যে এই লুটপাট চলে।
এমতাবস্থায় রোববার তদন্ত কমিটির মেয়াদ আরও তিনদিন বাড়ানো হয়েছে। তদন্ত কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সময় বৃদ্ধি। আগামী বুধবার (২০ আগস্ট) তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা রয়েছে তাদের।
রোববার (১৭ আগস্ট) তদন্ত কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে তিনদিন সময় বাড়ানো হয় বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) পদ্মাসন সিংহ।
এর আগে গত ১২ আগস্ট সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) পদ্মাসেন সিংহ। দুই সদস্য হলেন- কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফজালুল ইসলাম।
এমতাবস্থায় আজ প্রত্যাহার করা হয়েছে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ কে। নতুন ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মো. সারোয়ার আলম।
স্থানীয়দের দাবি, এ পর্যন্ত অন্তত দেড় কোটি ঘনফুট পাথর লুট হয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ২০০ কোটির বেশি।
সম্প্রতি সিলেটের সাদাপাথর এবং জাফলং পর্যটনকেন্দ্রের লাখ লাখ ঘনফুট পাথর লুটের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয় সারাদেশে। নড়েচড়ে বসে সরকার। এমনকি রিট হয় উচ্চ আদালতেও। আদালত লুণ্ঠিত পাথর উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপনেরও নির্দেশ দিয়েছেন। এমন প্রেক্ষাপটে সিলেটসহ সারাদেশে শুরু হয় সাঁড়াশি অভিযান। উদ্ধার হয় অন্তত ৪ লক্ষাধিক ঘনফুট পাথর।
বদলির পূর্বে জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ গণমাধ্যমকে বলেন, 'যারা কমিটিতে আছেন তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত আছে, যা তদন্তে কাজে দেবে। যদি কারও গাফিলতি প্রমাণিত হয়, অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
রোববার পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান রোববার বলেন, পাথর লুটে স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজশ ছিল। দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপদেষ্টার এমন ঘোষণার একদিনের মাথায় সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহারকে প্রত্যাহার করা হয়।
No comments:
Post a Comment