সময় ডেস্ক : কক্সবাজারে টেকনাফের উপকুলী ইউনিয়ন বাহারছড়া গহীন পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাচারকারী চক্রের বন্দিশালা থেকে শিশুসহ ৪৪ জন মালয়েশিয়াগামী যাত্রীকে উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকালে কোস্ট গার্ডের টেকনাফ স্টেশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মো. সালাহউদ্দিন রশীদ তানভীর।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোস্টগার্ড জানতে পারে, মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা গহীন পাহাড়ের বেশ কয়েকটি গোপন আস্তানায় মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে নারী ও শিশুসহ কিছু সংখ্যক লোকজনকে জড়ো করেছে।’
পাশাপাশি এই চক্রের সদস্যরা স্বল্প টাকার বিনিময়ে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে, তাদের আস্তানায় নিয়ে আসার পর আটকে রেখে নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায় করছিল। সেই তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার ভোর রাতের দিকে কোস্টগার্ডের অভিযানিক দল উক্ত এলাকায় বেশ কয়েক ঘণ্টা সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে নারী, শিশুসহ সর্বমোট ৪৪ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
তবে অভিযানিক দলের উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারী চক্রের সদস্যরা কৌশলে পালিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
কোস্টগার্ডের এ কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘টেকনাফে সাগর পুকুরের বিভিন্ন পয়েন্ট ব্যবহার করে অবৈধ পন্থায় সাগর পথে মানব পাচার করার জন্য বেশ কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র সক্রিয় হয়ে তাদের অপকর্ম অব্যাহত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের স্বল্প টাকার বিনিময়ে মালয়েশিয়া পৌঁছানোর কথা পাহাড়ে এনে জমায়েত করে। এরপর ভুক্তভোগীদের নির্যাতন করার পাশাপাশি মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে নির্যাতন করে থাকে।‘
এ বিষয়ে পাচারকারী চক্রের কবল থেকে উদ্ধার হওয়া উখিয়া সোনা পাড়া এলাকার বাসিন্দা সুপারী ব্যবসায়ী কামাল গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বলেন, ‘গত দুই দিন আগে বাহাড়ছড়া এলাকায় সুপারী ক্রয় করতে এসে পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ি। এ সময় আমার সঙ্গে থাকা নগদ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। এরপর আমার কাছ থেকে আরো এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। দাবিকৃত টাকা দিতে বিলম্ব হলে নির্যাতন করতো। অবশেষে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা আমাদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
উদ্ধার হওয়া জিম্মিদের তাদের স্বজনদের কাছে ফেরত পাঠানোর জন্য টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

No comments:
Post a Comment