জাবেদ এমরান : সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. নেজা-উন-নবী বলেন- দেশে অধিকাংশ দুর্ঘটনা যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হয়। চালক ও যানবাহনের পাশাপাশি সড়কও দুর্ঘটনার জন্য অনেকটা দায়ী। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, সড়ক মেরামত সহ সব মাধ্যমের সবাইকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সড়ক নিরাপদ হলে, আমরা নিরাপদ হবো। চালক, মালিক, বিআরটিএ সহ সবার অবস্থান থেকে কাজ করলে সড়ক নিরাপদ হবে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে সিলেট জেলা প্রশাসক ও সিলেট বিআরটিএ উদ্যোগে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
"মানসম্মত হেলমেট ও নিরাপদ গতি, কমবে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি" প্রতিপাদ্যে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম।
সিলেট বেতারের উপস্থাপক ও আবৃতি শিল্পী নাফিসা তানজীনের পারিচালনায় সভায় সিলেট বিভাগীয় কমিশনার আরো বলেন- দেশের মধ্যে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বেড়েই চলেছে। তার মধ্যে সড়কে মৃত্যুহার বেশি, কেনো দুর্ঘটনা হয়? আপনি যে বাহন চালাচ্ছেন সে বাহন ফিট আছে কি না যাচাই করছেন না। যান্ত্রিক ত্রুটি চেক করে যানবাহন চালানো আপনার দায়িত্ব। সড়কে নামার আগে সচেতন হতে হবে। সড়ক আইন মানতে হবে।
খান মো. নেজা-উন-নবী বিআরটিএকে উদ্দ্যেশ করে বলেন- সিরাতুন মোস্তাকিমের পথে, আল্লাহকে ভয় করে কাজ করতে হবে। সবাই ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে পারেনা। ডোপ টেস্ট সহ সবকিছু যাচাই বাচাই করতে হবে। আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্বপালন করতে হবে।
পরিবহন মালিকদের উদ্দ্যেশে তিনি আরো বলেন- আপনার সন্তানের জন্য আপনাকেই ভাবতে হবে। আপনার মালিকানাধীন যানবাহন ও চালকের প্রতি আরো দায়িত্বশীল হোন, দেখবেন দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে।
প্রধান অতিথি নিরাপদ সড়ক চাই এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনের নিহত স্ত্রীর প্রতি গভীর সমবেদনা ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম বলেন, সিলেটের যানবাহন চালকদের ডাটাবেজের আওতায় নিয়ে আসা অত্যান্ত প্রয়োজন। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মোটরসাইকেল চালকদের মানসম্মত হেলমেট পড়তে হবে।
তিনি কর্তৃপক্ষকে নির্দেন দেন হেলহেমবিহীন কাউকে যেন সিলেটের কোনো পাম্প তেল না দেয়, সে দিকে তদারকি করতে। একদিনের পরিবর্তে ড্রাইভিং লাইসেন্সের এর পরীক্ষার সময় এক সপ্তাহ বর্ধিত করার কথা বলেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সিলেট বিআরটিএর উপ-পরিচালক ডালিম উদ্দিন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার।
আরো বক্তব্য রাখেন, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মাইনুল হাসান, কলামিস্ট আফতাব চৌধুরী ও জাতীয় নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং নিসচা সিলেট জেলা শাখার আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম মিশু প্রমুখ।
উপস্থিত ছিলেন, বিআরটিএ সিলেটের সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী খালিদ মাহমুদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপ্রতি এম এ হান্নান, সড়ক ও জনপথ সিলেটের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন সোহাগ, জেলা প্রশাসক, সিলেট বিআরটিএ অফিস ও সড়ক জনপথ সিলেট অফিসের কর্মকর্তা, সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনসহ নানা সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক এবং দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য বৃন্দ।
আলোচনা সভার পূর্বে সকলের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে শোভাযাত্রা করে নগরীর কয়েকটা পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
সভার শুরুতে পরিত্র মহাগ্রন্থ কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সিলেট কালেক্টর মসজিদের ঈমাম হাফেজ মাওলানা মো. শাহ আলম।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিবৃন্দ বিআরটিএ ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষ হতে সিলেটে নানা সময় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ১৫ জন পরিবারের সদস্যের মধ্যে ৭৩ লক্ষ টাকা চেক বিতরণ করেন। এবং সড়ক বিভাগ সিলেটের পক্ষ থেকে মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে মানসম্মত হেলমেট বিতরণ করা হয়।




No comments:
Post a Comment