বিএনপির টিকেট পেতে সিলেটের ২৯ নেতা ঢাকায় - সময় আমাদের (somoy amader)

শিরোনাম


Sunday, 19 October 2025

বিএনপির টিকেট পেতে সিলেটের ২৯ নেতা ঢাকায়


সময় ডেস্ক :
সিলেট বিভাগের বিএনপির ১২৯ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর কারও নামই এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কাউকে বাদও দেওয়া হয়নি। বরং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সবাইকে নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে সংগঠন শক্তিশালী করা ও প্রচারণায় সক্রিয় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। 


একইসঙ্গে সতর্ক করেছেন, প্রার্থীতার প্রচারণা করতে গিয়ে যাতে অভ্যন্তরীণ বিরোধ না দেখা দেয়। এমন ঘটলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দলীয় সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।


রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সিলেট বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে জেলা ওয়ারি আলাদা এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিলেট বিভাগের ৪ জেলার মোট ১৯টি আসনের ১২৯ জন প্রার্থী।


বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের প্রতিটি আসনে ত্যাগী, যোগ্য ও জনপ্রিয় নেতাকেই চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেওয়া হবে। 


তিনি বলেন, মনোনয়ন ঘোষণার পর সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। একজন প্রার্থী নির্ধারিত হলে বাকিদের দায়িত্ব হবে তাকে বিজয়ী করা।


এর আগে শনিবার সিলেট বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ঢাকায় তলব করেছিল বিএনপি কেন্দ্র। বৈঠকে প্রতিটি আসনের সাংগঠনিক অবস্থা, মাঠ পর্যায়ের জনপ্রিয়তা, ভোটার সংযোগ ও সম্ভাব্য নির্বাচনী কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।


দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের প্রার্থী বাছাইয়ে বিএনপি তথ্যভিত্তিক যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে। প্রতিটি প্রার্থীর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে একটি ডিজিটাল ডেটাবেজে। এই ডেটাবেজে মূল পাঁচটি যোগ্যতা ও পাঁচটি অযোগ্যতার ঘর রাখা হয়েছে। সেসব ঘরে তথ্য পূরণ করলেই প্রার্থীর জন্য একটি স্বয়ংক্রিয় র‌্যাংকিং তৈরি হয়, যা মনোনয়ন কমিটির কাছে পাঠানো হচ্ছে। কেবল বিশেষ কারণেই এই র‌্যাংকিংয়ের বাইরে গিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।


যোগ্যতা নির্ধারণে বিবেচনায় রাখা হচ্ছে— অতীত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপস্থিতি, জনসম্পৃক্ততা, সাংগঠনিক দক্ষতা, পারিবারিক ও রাজনৈতিক ঐতিহ্য এবং ত্যাগ। 


অপরদিকে অযোগ্যতার মধ্যে রয়েছে— বিদ্রোহী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, ফৌজদারি অপরাধের ইতিহাস, আওয়ামী লীগের কাছ থেকে সুবিধা গ্রহণ, অপরাধে সম্পৃক্ততা ও নির্বাচনী এলাকায় অগ্রহণযোগ্যতা। এই ১০টি সূচকের আরও উপশ্রেণি যোগ করে প্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ প্রোফাইল বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।


বৈঠকে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা জানিয়ে দেন, প্রতিটি আসনে একজনকেই চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হবে। তবে বিকল্প হিসেবে আরও দুইজনের নাম সংরক্ষণ করা হবে। নির্বাচিত প্রার্থীর কোনো কারণে সমস্যা দেখা দিলে বিকল্প তালিকার মধ্য থেকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। একই সঙ্গে যাঁরা এবার মনোনয়ন পাবেন না, তাঁদেরকেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতিতে সক্রিয় থাকতে নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।


সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ও সিলেট-৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, আজকের বৈঠকে মহাসচিব মূলত দলীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কাউকে বাদ দেওয়া হয়নি, আবার কাউকেও মনোনীত করা হয়নি।


বৈঠক শুরু হওয়ার আগে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক মেয়র ও হবিগঞ্জের মনোনয়ন প্রত্যাশী জি কে গউছ জানান, বৈঠকটি সুনামগঞ্জ দিয়ে শুরু হয়ে মৌলভীবাজার পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি মজার ছলে বলেন, ঢাকায় এখন সিলেটের অসংখ্য নেতা। যেদিকে তাকাই, সেদিকেই এক একজন এমপি প্রার্থী।


বিএনপির উচ্চপর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, এই বৈঠকের মাধ্যমে সিলেট বিভাগের প্রার্থীদের মধ্যে ঐক্য রক্ষা ও মাঠ পর্যায়ে প্রতিযোগিতা ঠেকানোই ছিল মূল লক্ষ্য। মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার আগে কেউ যেন দলীয় প্রতীক বা প্রচারণা নিয়ে বিভাজন সৃষ্টি না করেন, সে বিষয়ে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে।


এ ব্যাপারে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী জানান, আজকের বৈঠকে মনোনয়ন চূড়ান্ত বিষয়ে কোনো কথা হয়নি, সবাইকে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলীয় হাইকমান্ড পরবর্তীতে যে সিদ্ধান্ত নিবে সবাইকে সে সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় বৈঠকে।


No comments:

Post a Comment

Pages