সময় ডেস্ক : ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে একটি সঙ্গীত উৎসবে হামলা চালিয়েছিল হামাস। হামলায় বেঁচে যান ইসরায়েলি যুবক রোই শালেভ (২৮)। তবে এই হামলায় হারিয়েছিলেন তার বান্ধবী ম্যাপাল অ্যাডাম ও বন্ধু হিলি সলোমনকে।
চলতি মাসের ৭ অক্টোবর সেই হামলার দুই বছর পূর্ণ হয়। এর কয়েকদিন পর গত শুক্রবার (১০ অক্টোবর) গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন রোই শালেভ।
দ্য জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, শুক্রবার নেতানিয়ার কাছে একটি হাইওয়ে এক্সিটে শালেভকে জ্বলন্ত গাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রতিবেদন অনুসারে, সিসিটিভি ফুটেজে শালেভের দেহ উদ্ধার হওয়ার কিছুক্ষণ আগে একটি গ্যাস স্টেশনে জ্বালানি ভর্তি করার দৃশ্য ধরা পড়েছে।
মৃত্যুর আগে ইনস্টাগ্রামে একটি বার্তা শেয়ার করেন শালেভ। সেখানে তিনি লিখেন, ‘আমি সত্যিই দুঃখিত। আমি আর এই ব্যথা সহ্য করতে পারছি না। আমি ভেতরে ভেতরে জ্বলছি। আর তা ধরে রাখতে পারছি না। আমার জীবনে কখনও এত যন্ত্রণা অনুভব করিনি। গভীর যন্ত্রণা আমাকে ভেতর থেকে কুরে কুরে খাচ্ছে। আমি কেবল চাই এই যন্ত্রণার অবসান হোক। আমি বেঁচে আছি- কিন্তু ভেতরে ভেতরে আমি ইতিমধ্যেই মৃত।’
টাইমস অফ ইসরায়েল জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শালেভ এবং তার বান্ধবী ম্যাপাল অ্যাডাম রে’ইমের কাছে নোভা উৎসবে ছিলেন। তাদের চারপাশে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা একটি ট্রাকের নিচে লুকিয়ে ছিলেন এবং ঘন্টার পর ঘন্টা মৃতের মতো পড়ে থাকার অভিনয় করেন। অ্যাডামকে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়েছিল, যেখানে শালেভকে দুবার গুলি করা হয় কিন্তু পরে তিনি বেঁচে যান।
২০২৪ সালের এক ইউটিউব সাক্ষাৎকারে শালেভ বলেছিলেন, ‘অ্যাডাম আমি তোমাকে ভালোবাসি এবং হামাসের এক সদস্য আসার কয়েক মিনিট আগে তাদের চোখ বন্ধ করে মৃতের মতো অভিনয় করেছিলেন। হামাস সদস্যরা চলে গেল এবং আমি চোখ খুললাম - ম্যাপাল আমার পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় আছে। তার বুকে গুলি লেগেছে।’
দ্য জেরুজালেম পোস্টের মতে, হামলার কয়েকদিন পর, শালেভের মাও আত্মহত্যা করে মারা যান। তার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।
উৎসবে নিহতদের পরিবারের প্রতিনিধিত্বকারী নোভা ট্রাইব কমিউনিটি সংগঠন শালেভের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ‘রোই শালেভ ছিলেন সম্প্রদায়ের মেরুদণ্ড এবং তার মৃত্যু আমাদের জন্য অকল্পনীয় সংবাদ।’ গ্রুপটি একটি ফেসবুক বিবৃতিতে বলেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় ও ২৫০ জনকে বন্দী করে হামাস। এরপরই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।

No comments:
Post a Comment