রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ মঙ্গলবার (১২ই আগস্ট) সকালে গণশক্তি সভা আয়োজিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে বঞ্চনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমি ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করব, আপনি জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে দেননি কেন? জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়া জনগণের অধিকার। সেই অধিকার কেড়ে নিলেন কেন? ছাত্ররা গত বছর ও এই বছরের প্রথমে ঘোষণাপত্র দেওয়ার চেষ্টা করেছে। মিথ্যা কথা বলে আপনি তাদের ঘোষণাপত্র দিতে দেননি।
তিনি বলেন, এখন একটা ঘোষণাপত্র দিয়েছেন, যেটা নিয়ে আমি অসন্তুষ্ট। প্রথম দিনই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আমি এটা প্রত্যাখ্যান করেছি। ড. ইউনূসের ঘোষণাপত্র দেওয়ার কোনো বৈধ অধিকার নেই আইনগতভাবে। কারণ, তিনি শেখ হাসিনার সংবিধানের অধীনে একজন উপদেষ্টামাত্র। তিনি গণ-অভ্যুত্থানের নেতা নন, তিনি গণ-অভ্যুত্থানের ফলমাত্র। আমাদের গণ-অভ্যুত্থান যদি ব্যর্থ হয়, সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লবে যদি আমাদের প্রতারিত করা হয়, তাহলে আমরা আবারও গণ-অভ্যুত্থান ঘটাব। পৃথিবীতে ভূরি ভূরি এমন উদাহরণ রয়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সংবিধানের অধীনে যখন শপথ বা সরকার গঠন হয়েছে, সেদিন তৎক্ষণাৎ আমি বলেছিলাম, সাংবিধানিক একটা প্রতিবিপ্লব ঘটেছে। গত বছরের ৮ই আগস্ট সরকার গঠনে শেখ হাসিনার সংবিধানে যখন আপনি গণ-অভ্যুত্থান ঢুকিয়ে দিলেন, তখন আপনি শেখ হাসিনার রাষ্ট্রটা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করলেন। এতটুকু বোঝার কাণ্ডজ্ঞান আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজে, আমাদের সাংবাদিক মহলে হয়নি। যেহেতু এটা হয়নি, এর কাফফারা (প্রায়শ্চিত্ত) প্রতিদিন দিতে বা গুনতে হচ্ছে।
১৯৭২-এর সংবিধানের সমালোচনা করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘জিয়াউর রহমান সাম্য, মানবিক মর্যাদার, সামাজিক ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করতে চেয়েছিলেন। এ জন্য তিনি যুদ্ধ করেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি কি সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা- এসবের জন্য যুদ্ধ করেছেন? আমরা এটার জন্য যুদ্ধ করিনি। আমাদের এগুলো চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৯৭২-এর সংবিধান যারা লিখেছে, তারা ছিল পাকিস্তানি। কারণ, পাকিস্তানের সংবিধান লেখার জন্য ১৯৭০ সালে তাদের আমরা নির্বাচিত করেছিলাম।’
No comments:
Post a Comment