সুদানের সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে শতশত লা-শ - সময় আমাদের (somoy amader)

শিরোনাম


Saturday, 1 November 2025

সুদানের সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে শতশত লা-শ


সময় ডেস্ক :
সুদানের উত্তর দারফুর রাজ্যের রাজধানী এল-ফাশের শহরে ভয়াবহ সহিংসতার পর রাস্তাজুড়ে পড়ে আছে শত শত মরদেহ, যাদের কবর দেওয়ার মতো কেউ নেই। 


আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) শহরটি দখল করার সময় অন্তত ১ হাজার ৫০০ মানুষকে হত্যা করেছে। নিহতদের মধ্যে শুধুমাত্র একটি হাসপাতালেই ৪৬০ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে।


জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, শহরটিতে আটকে থাকা সাধারণ মানুষ ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। আহতদের অনেকে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছেন চিকিৎসাহীন অবস্থায়। 


শহর ছেড়ে পালিয়ে ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ ৭০ কিলোমিটার দূরের তাভিলা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন, যেখানে ইতোমধ্যে সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ অবস্থান করছেন।


বেঁচে ফেরা এক নারী, পাঁচ সন্তানের মা হায়াত, এএফপিকে বলেন, সাতজন আরএসএফ যোদ্ধা তাদের ঘরবাড়ি লুটপাটের পর তাঁর ১৬ বছর বয়সী ছেলেকে তাঁর সামনেই হত্যা করে। তিনি জানান, “রাস্তাজুড়ে অসংখ্য মরদেহ পড়ে আছে, আহতদের কেউ উদ্ধার করতে পারছে না।” 


আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী হুসেইন বলেন, বোমাবর্ষণে আহত হয়েও তিনি এক পরিবারের সহায়তায় গাধার গাড়িতে করে তাভিলায় পৌঁছাতে সক্ষম হন।


নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল জানিয়েছে, তাভিলা শরণার্থী শিবিরে পৌঁছানো মানুষের সংখ্যা এখনো সীমিত, অনেকেই পথে প্রাণ হারিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 


জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানিয়েছেন, দারফুরে ত্রাণ কার্যক্রম জোরদারে সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ৪৫০ জনেরও বেশি রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী ও সাধারণ নাগরিক হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।


সুদান বিশেষজ্ঞ শায়না লুইস এ হত্যাযজ্ঞকে “মানবতার বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপরাধ” আখ্যা দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এ ধরনের গণহত্যার আশঙ্কা সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছিল, কিন্তু কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। 


স্যাটেলাইট চিত্রেও দেখা যাচ্ছে, শহরের বিশাল এলাকা রক্তে লাল হয়ে আছে। মানবিক সংস্থাগুলো জানিয়েছে, এল-ফাশেরে এখনো খাদ্য, পানি ও ওষুধের তীব্র সংকট চলছে, পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা করছে তারা।


No comments:

Post a Comment

Pages