নারীসহ হোটেলে ধরা পড়া সেই ওসি প্রত্যাহার - সময় আমাদের (somoy amader)

শিরোনাম


Monday, 7 July 2025

নারীসহ হোটেলে ধরা পড়া সেই ওসি প্রত্যাহার


সময় ডেস্ক :
যশোরের একটি সরকারি রেস্ট হাউসে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে অবস্থান করা ওসি সাইফুল ইসলামের ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন ওই ওসিকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করেছে। ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে পুরো ঝিনাইদহ জেলায় শুরু হয়েছে ব্যাপক গুঞ্জন, যার রাজনৈতিক রেশ এখন কেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছেছে।


সোমবার (৭ জুলাই) সকালে তাকে প্রত্যাহার করা হয় বলে নিশ্চিত করে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ প্রশাসন।


জানা যায়, গত ৩০ জুন সন্ধ্যায় যশোর পাউবোর পুরাতন রেস্ট হাউসের ‘কপোতাক্ষ’ কক্ষে ওঠেন ওসি সাইফুল ইসলাম। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করেন তিনি। খবর পেয়ে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি দলবল নিয়ে সেখানে যান। রেস্ট হাউসের দরজায় ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে ওসি সাইফুল বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রদল নেতারা তাকে টেনেহিঁচড়ে আবার কক্ষে নিয়ে যান। এ সময় সেখানে বাকবিতণ্ডা, ধস্তাধস্তি ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।


এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের “আচরণ ও জবাবদিহি” নিয়ে জনগণের মধ্যে নতুন করে প্রশ্ন ওঠে- বিশেষ করে যখন সেটি কোনো রাজনৈতিক কর্মীর উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে ফাঁস হয়।


রেস্ট হাউসের কেয়ারটেকার মিজানুর রহমান জানান, ওসি সাইফুল নিজেই এসে স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে নিয়ে কক্ষ নেন। পরে কিছু লোক এসে দরজায় ধাক্কাধাক্কি করেন এবং ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।’


ঘটনার জেরে জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেয় এবং সাইফুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়।


ওসি সাইফুল ইসলাম দাবি করেন, কোনো অনৈতিক কিছু ঘটেনি। তিনি ব্যক্তিগত কাজে যশোরে এসেছিলেন এবং নারী বন্ধুটিকে সঙ্গে নিয়ে রেস্ট হাউসে অবস্থান করছিলেন। তার ভাষায়, ‘কিছু ছাত্রনেতা এসে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলে চলে যান।’ ঘটনাটি ‘অপপ্রচার’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা চলছে।


তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ঘটনাটি যতটা ব্যক্তিগত বলা হচ্ছে, ততটাই তা রাজনৈতিকও। ছাত্রদল সেখানে উপস্থিত না হলে হয়তো ঘটনাটি এভাবে জনসম্মুখে আসত না। আবার এমনটিও বলা হচ্ছে- রাজনৈতিক শক্তির মধ্যকার দ্বন্দ্বেরই এক বহিঃপ্রকাশ এটি।


ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মনজুর মোর্শেদ বলেন, ‘ঘটনার পরপরই ওসি সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’


রাজনৈতিক প্রশাসনের প্রতি প্রশ্ন: জবাবদিহির গতি কোন পথে? প্রশাসনের একজন কর্মকর্তার এমন কর্মকাণ্ড সামনে আসায় সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছে- সরকারি দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা কি রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় আইনের ঊর্ধ্বে উঠছেন? আবার কেউ কেউ এটিকে ছাত্রদলের রাজনৈতিক ‘আচরণগত সীমা লঙ্ঘন’ বলেও দেখছে।


তবে একটি বিষয় স্পষ্ট- জনগণ এখন শুধু তদন্তের আশ্বাসে সন্তুষ্ট নয়। তারা দেখতে চায়, প্রশাসনের ভেতরে থাকা বিতর্কিত অবস্থানধারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা আদৌ নেওয়া হয় কি না।


No comments:

Post a Comment

Pages